ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা গোপাল পালের নিকট চাঁদা দাবী করে আসছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের ক্যাডারেরা।
চাঁদা না পেয়ে গোপাল পালের বাড়ির উঠোন থেকে হাঁস ধরে নিয়ে যাচ্ছিল আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা। গোপাল পাল কারণ জানতে চাইলে সন্ত্রাসীরা সাফ সাফ বলে দেয়;- “হাঁসের মাংস খেতে ইচ্ছে করছে তাই হাঁস নিয়ে যাচ্ছি।
মালুর বাচ্চা আমাদের বাংলাদেশে থাকিবে আর দুটা হাঁস খাওয়াইতে পারিবে না? বেশি কথা বললে হাত পা ভেঙে পেটের ভিতরে গুজে দেব।
আর এটা গরু নয়, এটা হাঁস। গরু হলে বঙ্গদেশের ফেইসবুকবাসী সাতপাঁচ বিবেচনা না করেই এটাকে ইস্যু বানিয়ে নিত। ‘গরু’ হলেই বাংলার লেজবিহীন দোপেয় গরুরা ভেবে নিত আবার ভারতে কোন মুসলমান ভাই গরুর মাংস খাওয়ার জন্য মাইর খেলো। তাই অন্তত কম করে হলেও ৭দিন ফেইসবুক গরম থাকতো।
যেহেতু তোমরা ভারতের মুসলমান নও বাংলাদেশের মালু আর আমরাও হাঁস নিয়ে যাচ্ছি গরু নয় তাই গরুর বাছুড় মানবতাবাদী আর সেক্যুলারেরা তোমাদের জন্য প্রতিবাদ করবে না। কেউ জানবেও না।
সবকিছু হবে অগোচরে, জানবে না কেহ…….
যাইহোক গোপাল পাল চুপ থাকেন নি প্রতিবাদ করেছেন। আর প্রতিবাদের ফলাফল হচ্ছে সেখানকার স্থানীয় যুবলীগ সভাপতি মিন্টুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ৮ জন মানুষকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
রাতে আহতদের পক্ষ হয়ে থানায় মামলা করা হয়। ফলে সন্ত্রাসীরা আবার রাতে এসে হানা দেয়। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি। মামলা তুলে না নলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়। কিভাবে পুড়িয়ে মারা হবে তার স্যাম্পল হিসেবে তারা উঠোনের ৪টি খড়ের গাদাও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে দেখায়।
নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় পালপাড়ার লোকজন মধ্যরাতেই ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
মানুষজন বাড়ি ছেড়ে পালালো, ৮ জন মানুষকে কুপিয়ে আহত করা হলো তবুও ফেইসবুকে কোন সমালোচনার ঝড় বয়ে গেল না। বাংলাদেশও অসহিষ্ণু হলো না।
আহা, আজ যদি হাঁস আর মালাউন হিন্দু না হয়ে ভারতের গরু আর মুসলমান নিয়ে ঘটনা হতো! শালার ইস্যুটা হলো না।
ওদিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে আওয়ামীলীগের লোকজনের হাঁসের মাংস খাওয়ার ইচ্ছে হয়নি। তারা শীতার্থ ছিল। তাই শ্রীপুর বাজার থেকে বেছে বেছে তিনটা হিন্দু ব্যবসায়ীর দোকান লুটপাট করেছে।
দোকানে ঢুকে তারা পছন্দমতো জ্যাকেট, সুন্দর সুন্দর টি-শার্ট, মাথার টুপি ইত্যাদি শীতবস্ত্র নিয়েছে। বউ আর গার্লফ্রেন্ডের জন্য দামী জামদানি শাড়িও নিয়েছে। কোন রকম শব্দ করলে চোখ তুলে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছে।
আর পুলিশ বলেছেন,”আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই অপরাধীরা পালিয়ে যায় নয়তো আমরা কিন্তু গিয়েছিলাম….হুঁ।”
দিনাজপুরে ইসকন মন্দিরে বোমা ও গুলি হামলা করেছে আকাশ থেকে নেমে আসা দুর্বৃত্তরা(মুসলিম বলছি না)। কান্তজীর মন্দিরের সামনে রাসমেলায় বোমা হামলা হয়েছে।
ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় এক খৃষ্টান পরিবারের ভাই-বোনসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করেছে। লালমনিরহাটে চার্চের ফাদার তপন বর্মনকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এতকিছুর পরেও কোন ইস্যু হয় না। সপ্তাহখানেক অসহিষ্ণুতা নিয়ে আলোচনাও হয় না। হবেই বা কেন?
-গরু আর মুসলমান নেই তো। যেখানে গরু আর মুসলমান নাই সেখানে কোন প্রতিবাদও নাই। বাংলাদেশের সেক্যুলারিজম, অসাম্প্রদায়িকতা সবকিছু ভারতের গরুর উপর নির্ভর করে।