পশ্চিমবঙ্গের মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতা ও কৌতুকের মাধ্যমে তার প্রকাশ অসাধারণ!
১৯৭৭ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় হাওড়া রেল স্টেশনের বাইরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দেয়াল লিখন দেখা গেল- “যদি দাও হাতে, রবে দুধে-ভাতে” (হাত হচ্ছে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক)। ঠিক তার নিচে সিপিএমের কর্মীরা সম্ভবত লিখে রেখেছিল- “গাঁড় মারবে ভূতে, জল পাবেনা ধুতে”।
আওয়ামী লীগ এবং ভোট ডাকাতি দুটি অবিচ্ছেদ্য প্রপঞ্চ। সমান্তরাল বললে যেমন আপনার চোখের সামনে একটি রেললাইন ভেসে উঠবে, আওয়ামী লীগ শব্দটি উচ্চারণ করলেই আপনার মানসপটে ভেসে উঠবে ভোট ডাকাতির চিত্র। আর পারিনা গুরু, সেই ১৯৭৩ থেকে শুরু।
ভোট ডাকাতি কে এই দলটি একটি শিল্পে পরিণত করেছে। নিত্য নতুন আইডিয়া, নিত্য নতুন প্রযুক্তি,নিত্য নতুন পদ্ধতি। ১৯৭৩ সালে তারা ভোট ডাকাতি তে হেলিকপ্টার এর ব্যবহার শুরু করে সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল! সেই আমলে ভোট ডাকাতি তে এরচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব ছিল না। আর এবার ব্যবহৃত হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি ইভিএম মেথড।
সনাতনী কেন্দ্র দখল, জাল ভোট এবং কুটির শিল্প পদ্ধতির ভোট ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়ার পর ২০০৮ বান্ডেল মেথডের ভোট ডাকাতি করেছিল।
২০১৪ সালে এলো ‘বিনা ভোট মেথড’। সেইবার কোন ভোট ছাড়াই ১৫৩ জন প্রার্থীকে এরা নির্বাচনের আগেই এমপি বানিয়ে ফেলেছিল। জনগণ সেই ভোটে নির্বাচিত সরকারকে আদর করে নাম দিল ‘বিনাভোটের সরকার’। ২০১৮ সালে হয়েছিল ‘লাইলাতুল ইলেকশন’। ভোটের আগের রাতেই সবগুলো কেন্দ্র দখল করে ভোট দেয়া শেষ! জনগণ এবার এই সরকারকে নাম দিলো ‘মিডনাইট সরকার’!
আর আজ আয়োজন করা হয়েছে ‘ভুতের ভোট’। জনগন ইভিএম মেশিনে ভোট দেবে চানখারপুলে সেই ভোট দিয়ে পড়বে ফকিরাপুলে। ফলাফল- চানমিয়া হয়ে যাবে ফকির।
মেশিনকে যেহেতু আগে থেকেই এভাবে প্রোগ্রাম করে রাখা হয়েছে, তাই তথ্য বাবাও উত্তেজনার বশে আগে থেকেই ভোটের ফলাফল ঘোষণা করে দিয়েছেন।
সবাই জানে, তারা ভোট দিতে না গেলেও মেশিন ভোট দিয়ে দেবে; এমনকি মৃত ব্যক্তিদের ভোটও। এবার আর আওয়ামী লীগের নেতাদের নামের আগে ভোট চোর বিশেষণ বসবে না, এবার আর পুলিশকে মাঝরাতে ভোট দিতে হবে না। এবার ভোট দেবে ভুতে।
২০১৫ সালে ফাউল খেলে, ফাউল ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিল ফাউল মেয়র; এবার ভুতের মেশিনে, ভুতের ভোটে নির্বাচিত হবে ভুতের মেয়র।